Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কুঁচিয়া মাছের নিয়ন্ত্রিত প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল

কুঁচিয়া মাছ বাংলায় যেমন- নানা (কুইচ্চা, কুঁচে, কুঁচো) নামে পরিচিত তেমনি ইংরেজিতেও বিভিন্ন (Gangetic mud eel, Rice eel, Mud eel, Swamp eel) নামে ডাকা হয়। বৈজ্ঞানিক নাম Monopterus cuchia বাংলাদেশ, ভারতের উত্তরাঞ্চল, নেপাল, মিয়ানমার এবং পাকিস্তান কুঁচিয়ার আবাসভূমি হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশের হাওর, বাঁওড়, খাল-বিল, পচা পুকুর, ধানক্ষেতে এবং বন্যাপ্লাবিত অঞ্চলে এদের পাওয়া যায়। এ দেশের সর্বসাধারণের কাছে জনপ্রিয় না হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে এর ব্যাপক চাহিদার কারণে এ মাছের বাণিজ্যিক মূল্য অনেক।
রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ মাছ হিসেবে কুঁচিয়া চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু কুঁচিয়ার পোনা উৎপাদন করা সাধারণ কৃষকদের জন্য সহজসাধ্য নয়। ডিম উৎপাদন সংখ্যা কম বিধায় পৃথিবীর কোনো দেশেই এখনও কুঁচিয়ার কৃত্রিম প্রজনন বাণিজ্যিক সফলতায় পর্যবশিত হয়নি। সুতরাং প্রকৃতি থেকে নির্বিচারে কুঁচিয়া আহরণ করে বাণিজ্যিক সুবিধা গ্রহণের চেয়ে নিয়ন্ত্রিত প্রজননের মাধ্যমে পোনা উপাদন করে কুঁচিয়ার চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করে বিপন্নতার হাত থেকে এ মাছকে রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।
কুঁচিয়া মাছের বৈশিষ্ট্য

  • সাপের মতো দেখতে হলেও কুঁচিয়া একটি মাছ।
  • কুঁচিয়ার ফুলকা বিলুপ্ত তবে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য মাথার দুই পাশে থলে আকৃতির অঙ্গ রয়েছে।
  • শরীর লম্বা বেলুনাকৃতির এবং স্লাইম নিঃসরিত হয় বিধায় শরীর পিচ্ছিল হয়ে থাকে।
  • বিপদের সময়ে সামনে এবং পেছনে চলাচল করতে পারে।
  • কুঁচিয়া মাছকে আঁশবিহীন মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে গায়ে ক্ষুদ্রাকৃতির আঁশ বিদ্যমান যার বেশির ভাগ অংশই চামড়ার নিচে সজ্জিত থাকে।
  • যে কোনো প্রতিকূল পরিবেশ যেমনÑ স্বল্পমাত্রায় অক্সিজেন এবং উচ্চ তাপমাত্রা এরা সহ্য করতে পারে। এছাড়া কম গভীর জলাশয়েও এরা সহজেই বাস করতে পারে।
  • কুঁচিয়া অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ধৈর্য শক্তির অধিকারী মাছ। কুঁচিয়া মাটিতে গর্ত করে বা জলজ আবর্জনার নিচে লুকিয়ে থাকতে অর্থাৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ পছন্দ করে।
  • কুঁচিয়া রাক্ষুসে স¦ভাবের ও নিশাচর প্রাণী। প্রকৃতিতে কুঁচিয়া ছোট ছোট পোকামাকড়, জীবন্ত ছোট মাছ, কেঁচো, শামুক-ঝিনুকসহ নানা অমেরুদণ্ডী প্রাণী খেয়ে জীবনধারণ করে থাকে।

কুঁচিয়া মাছের ঔষধি গুণ
বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চলের অধিবাসী বিশেষত উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে এ মাছ ব্যাপক জনপ্রিয়। উপজাতীয় সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে এ মাছ খেলে শারীরিক দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা, অ্যাজমা, রক্তক্ষরণ এবং ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগসমূহ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এ মাছের বায়ুথলি তাজা বা শুকনা অবস্থায় খেলে অ্যাজমা এবং বাতজ্বর আর বাড়ে না। কুঁচিয়া মাছের মাংসের সুপ বা মাংসের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের হার্বস মিশিয়ে কারি রান্না করে খেলে এনিমিয়া, পাইলস ইত্যাদি রোগ সেরে যায়। বিভিন্ন গবেষণার প্রকাশিত প্রতিবেদনও অনেক ক্ষেত্রে তাদের এ বিশ্বাসের সঙ্গে একমত পোষণ করে।
কুঁচিয়া মাছের পুষ্টিমান
পুষ্টিমান বিবেচনায় কুঁচিয়া মাছে পুষ্টির পরিমাণ অন্যান্য মাছের তুলনায় বেশি। ভক্ষণযোগ্য প্রতি ১০০ গ্রাম কুঁচিয়া মাছে প্রায় ১৮.৭ গ্রাম প্রোটিন, ০.৮ গ্রাম চর্বি, ২.৪ গ্রাম কার্বহাইড্রেট, ১৪০০ মাইক্রো গ্রাম ভিটামিন, ১৮৫ গ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে। এছাড়া ১০০ গ্রাম কুঁচিয়া মাছ ৩০০ কিলোক্যালরির বেশি খাদ্য শক্তির জোগান দিতে পারে।
কুঁচিয়া মাছের প্রজনন বৈশিষ্ট্য
প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী কুঁচিয়া মাছের গায়ের রঙ গাঢ় হলুদ বর্ণের এবং পুরুষ কুঁচিয়া মাছ কালো বর্ণের হয়ে থাকে। যেহেতু কুচিয়া মাছ লিঙ্গ পরিবর্তন করতে সক্ষম তাই বাহ্যিক বর্ণের ওপর ভিত্তি করে পুরুষ এবং স্ত্রী কুঁচিয়া মাছকে আলাদা করা সম্ভব নয়। তবে প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী কুঁচিয়া মাছের জননাঙ্গ কিছুটা স্ফিত হয় এবং ডিম ধারণ করার কারণে পেটের দিক যথেষ্ট ফোলা থাকে। পুরুষ কুঁচিয়া মাছ স্ত্রী কুঁচিয়া মাছের তুলনায় আকারে ছোট হয়ে থাকে। কুঁচিয়া মাছ বছরে একবার মাত্র প্রজনন করে থাকে। প্রকৃতিতে ২০০-৪০০ গ্রাম ওজনের কুঁচিয়া মাছ পরিপক্ব হয়ে থাকে এবং গড়ে ২৫০-৬৫০টি ডিম ধারণ করে। ডিম পাড়ার জন্য কুঁচিয়া আঁকাবাঁকা গর্ত করে থাকে। এপ্রিল মাসে শেষ সপ্তাহ থেকে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কুঁচিয়া মাছ প্রজনন কার্য সম্পাদন করে থাকে। নিজেদের তৈরি গর্তে ডিম দেয় এবং সেখানেই ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। এ সময় মা কুঁচিয়া খুব কাছে থেকে ডিম পাহাড়া দেয় এবং বাবা কুঁচিয়া আশপাশেই অবস্থান করে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়া থেকে শুরু করে ডিম্বথলি নিঃশোষিত না হওয়া পর্যন্ত বাচ্চাগুলো মা কুঁচিয়া শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
কুঁচিয়া মাছের নিয়ন্ত্রিত প্রজনন কৌশল
ব্রুড প্রতিপালন পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতকরণ
পুকুরের আয়তন ৩-১০ শতাংশ হলে ভালো। যেহেতু কুঁচিয়া মাটির অনেক নিচ পর্যন্ত গর্ত করে এক পুকুর থেকে অন্য পুকুরে চলে যায় সেহেতু নির্ধারিত পুকুরে কুঁচিয়াকে রাখার জন্য পুকুরের তলদেশ এবং পাড় পাকা করা সম্ভব হলে ভালো নতুবা গ্লাস নাইলনের নেট বা রেক্সিন বা মোটা পলিথিন দিয়ে পুুকুরের তলদেশ এবং পাড় ঢেকে দেয়া উত্তম। গ্লাস নাইলনের নেট বা রেক্সিন বা মোটা পলিথিনের ওপর কমপক্ষে ২-৩ ফিট মাটি দিতে হবে। পুকুরের একপাশে কম্পোস্টের স্তূপ অথবা সারা পুকুরে এক ইঞ্চি পরিমাণ কম্পোস্ট দিতে হবে। পুকুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে কচুরিপানা থাকতে হবে। বিশেষ করে প্রজনন মৌসুমে কচুরিপানা পুকুরের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি পরিমাণে থাকতে হবে। যেহেতু কুঁচিয়া কম গভীরতাসম্পন্ন পুকুর বা বিলে পাওয়া যায় তাই তাদের উপযোগী পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে প্রজনন কালে পানির গভীরতা সর্বোচ্চ এক ফুট পর্যন্ত রাখা উত্তম।
ব্রুড কুঁচিয়া মাছ সংগ্রহ এবং পরিচর্যা
ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ২৫০-৩৫০ গ্রাম ওজনের ব্রুড কুঁচিয়া মাছ সংগ্রহ করতে হবে। সংগৃহীত ব্রুড কুঁচিয়াকে নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো জন্য হ্যাচারিতে বা পুকুরে হাপায় রেখে ৫-৭ দিন পরিচর্য়া করতে হবে। আহরণ পদ্ধতির জটিলতার কারণে সংগৃহীত অধিকাংশ কুঁচিয়ার মুখে আঘাত থাকে। এছাড়া সংগ্রহকারীরা দীর্ঘদিন অধিক ঘনত্বে চৌবাচ্চায় বা ড্রামে মজুদ রাখে বিধায় পেটের নিচের দিকে ছোপ ছোপ রক্ত জমাট বাঁধা অবস্থায় থাকে। আঘাতপ্রাপ্ত বা শরীরে রক্ত জমাট থাকা ব্রুড কুঁচিয়াকে আলাদা করে আঘাতের পরিমাণ বিবেচনা করে ০.২-০.৫মিলি অ্যান্টিবায়োটিক রেনামাইসিন প্রয়োগ করতে হবে। স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে প্রয়োজনে একই হারে ২য় বার অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে।
ব্রুড কুঁচিয়া মজুদ
সুস্থ সবল ব্রুড কুঁচিয়ার পুরুষ এবং স্ত্রী শনাক্ত করার পর ১৫০-২৫০ গ্রাম ওজনের পুরুষ কুঁচিয়া এবং ২৫০-৩৫০ গ্রাম ওজনের স্ত্রী কুঁচিয়া মাছকে প্রস্তুতকৃত পুকুরে ১ঃ২ অনুপাতে শতাংশে ৩০টি করে মজুদ করতে হবে।
খাদ্য প্রয়োগ
খাদ্য হিসেবে জীবিত মাছ ও শামুক সরবরাহের পাশাপাশি সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। ১০০ গ্রাম সম্পূরক খাদ্যে মাছের ম- (৫০%), চেওয়া মাছ থেকে তৈরিকৃত চেওয়া শুঁটকি থেকে প্রস্তুতকৃত ফিশমিল (৪০%), কুঁড়া (৫%) এবং আটা (৫%) দিতে হবে। কুঁচিয়া নিশাচর প্রাণী বিধায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর নির্ধারিত ট্রেতে খাদ্য প্রয়োগ করা উত্তম।
বেবি কুঁচিয়া সংগ্রহ
প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হলে মে-জুন মাসের মধ্যে ব্রুড প্রতিপালন পুকুর থেকে পোনা সংগ্রহ করা সম্ভব। মূলত ডিম্বথলি নিঃশোষিত হওয়ার পর পোনাগুলো বাবা-মায়ের আশ্রয় ছেড়ে কচুরিপানার শেখরে উঠে আসে এবং সেখানে খাদ্যের সন্ধান করে। মে মাসের ১ম সপ্তাহে কিছু পরিমাণে কচুরিপানা উঠিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। পোনা প্রাপ্তি নিশ্চিত হলে প্রাথমিকভাবে গ্লাস নাইলনের তৈরি হাপার মাধ্যমে কচুরিপানা সংগ্রহ করে পুকুর পাড়ে বা সমতল স্থানে উঠিয়ে আনতে হবে।
১৫-২০ মিনিটের জন্য হাপার মুখ হালকাভাবে বেঁধে রাখতে হবে। অতঃপর হাপার বাঁধন খুলে আলতোভাবে ওপর থেকে কচুরিপানা ঝেড়ে ঝেড়ে সরিয়ে ফেলতে হবে। ইতোমধ্যে জমা হওয়া পোনাগুলোকে সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে হ্যাচারিতে বা পুকুরে পূর্ব থেকে স্থাপিত গ্লাস নাইলনের হাপায় মজুদ করতে হবে। যেহেতু সব মাছ একই সময়ে পরিপক্ব হয় না তাই মে মাসে কচুরিপানা থেকে পোনা সংগ্রহের পর পর্যাপ্ত পরিমাণে কচুরিপানা পুকুরে পুনরায় দিতে হবে। ১৫ দিন অন্তর অন্তর কচুরিপানা পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং একই পদ্ধতিতে পোনা সংগ্রহ করতে হবে।
পোনা লালন-পালন ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা
কুঁচিয়ার পোনা স্টিলের ট্রে বা সিমেন্টের চৌবাচ্চায় বা পুকুরে গ্লাস নাইলনের হাপায় লালন-পালন করা যায়। ট্রে বা চৌবাচ্চা বা হাপা আয়তাকার বা বর্গাকার হতে পারে। সাধারণত মাছের ক্ষেত্রে ৩টি অর্থাৎ রেণু পোনা, ধানী পোনা এবং অঙ্গুলি পোনা পর্যায়ে পৃথক পৃথকভাবে পরিচর্যা করা হয়ে থাকে। কুঁচিয়ার পোনাও ৩টি ধাপে প্রতিপালন করতে হয়। ট্রে বা চৌবাচ্চায় বা হাপায় কুঁচিয়ার পোনা লালন-পালনের ক্ষেত্রে ওজনের ওপর ভিত্তি করে ধাপে ধাপে খাদ্য পরিবর্তন করতে হবে। কুঁচিয়া অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ পছন্দ করে বিধায় প্রতিটি ধাপে পোনা মজুদের পর পরই ঝোপালো শেকড় যুক্ত কচুরিপানা কিছু পরিমাণে সরবরাহ করতে হবে। যেহেতু ১ম ও ২য় ধাপের পোনার আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে, সেহেতু কচুরিপানা সংগ্রহ করে সহজেই পোনা নমুনায়ন করা সম্ভব। কুঁচিয়া মাছ স্বপ্রজাতিভোগী (Cannibalistic) প্রাণী বিধায় প্রতিটি ধাপে স্বাস্থ্য পরীক্ষাকালীন সময়ে অপেক্ষাকৃত ছোট এবং দুর্বল পোনাগুলোকে আলাদা করতে হবে।
১ম ধাপ অর্থাৎ বেবিকুঁচিয়া/গ্লাস ইল প্রতিপালন-   
ডিম্বথলি নিঃশোষিত হওয়া পোনাকে বেবিকুঁচিয়া বা গ্লাস ইল বলা হয়। বেবিকুঁচিয়ার গায়ের রং গাঢ় বাদামি বা কালো বর্ণের হয়। এ পর্যায়ের পোনা প্রতিপালনের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গ মিটারে ৪০০-৫০০টি কুঁচিয়ার পোনা মজুদ করা যায়। বেবিকুঁচিয়া মজুদের পর পর্যাপ্ত পরিমাণে জুপ্লাংটন সরবরাহ করতে হবে এবং বেবিকুঁচিয়া মজুদের ২-৩ দিন পর সম্ভব হলে রাজপুঁটি অথবা যে কোনো মাছের সদ্য প্রস্ফুটিত রেণু সরবরাহ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে জুপ্লাংটন সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে। ৩-৪ দিন অন্তর অন্তর পোনার স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করে অপেক্ষাকৃত ছোট পোনাগুলোকে আলাদা করতে হবে।
২য় পর্যায়ে কুঁচিয়ার পোনা প্রতিপালন
সাধারণত ১০-১৫টি পোনার ওজন ১ গ্রাম হলে এ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে ১৫০-২০০টি কুঁচিয়ার পোনা মজুদ করা যায়। এ পর্যায়ে জীবিত টিউবিফেক্স সরবরাহ করতে হবে। এজন্য ট্রে বা চৌবাচ্চায় টিউবিফেক্সের বেড তৈরি করতে হবে। তবে হাপায় পোনা লালন-পালনের ক্ষেত্রে টিউবিফেক্স কুচি কুচি করে কেটে সরবরাহ করতে হবে। এ সময় ৫-৭ দিন পর পর পোনার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে অপেক্ষাকৃত ছোট পোনাগুলোকে আলাদা করতে হবে।
৩য় পর্যায়ে কুঁচিয়ার পোনা প্রতিপালন
সাধারণত ৪-৫ গ্রাম ওজনের পোনা এ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে ৭৫-১০০টি কুঁচিয়ার পোনা মজুদ করা যায়। এ পর্যায়ে খাদ্য হিসেবে জলজ পোকা (হাঁস পোকা) জীবিত বা মৃত অবস্থায় সরবরাহ করা যেতে পারে। পাশাপাশি সম্পূরক খাদ্য হিসেবে পোনার দেহ ওজনের ১০-১৫% পর্যন্ত মাছের ভর্তা সন্ধ্যার পর সরবরাহ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে এ সময় ট্রে বা চৌবাচ্চায় এঁটেল বা দো-আঁশ মাটি দিয়ে পুকুরের মতো পাড় তৈরি করে প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করলে কুঁচিয়া স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। বাজার উপযোগী কুঁচিয়া উৎপাদনের জন্য পোনার ওজন ১৫-২০ গ্রাম হলে ব্রুড প্রতিপালনের মতো একই পদ্ধতিতে প্রস্তুতকৃত পুকুরে মজুদ করতে হবে।
পরামর্শ

  • ট্রে বা চৌবাচ্চায় বা হাপায় পোনা প্রতিপালনের ক্ষেত্রে কচুরিপানা অল্প পরিমাণে দিতে হবে;
  • কচুরিপানার পরিমাণ বেশি হলে নাইট্রোজেনের আধিক্যের কারণে পোনার মৃত্যুহার বেড়ে যেতে পারে;
  • কচুরিপানা তুলে সহজেই পোনার নমুনায়ন করা যায়;
  • ব্রুড কুঁচিয়া মাছের পুকুরে জোগের আক্রমণ যাতে না হয় সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে;
  • জোঁকের আক্রমণ হলে প্রাদুর্ভাবের ওপর ভিত্তি করে পুকুরে পানি কমিয়ে শতাংশে ২৫০-৩৫০ গ্রাম লবণ প্রয়োগ করে ৭-৮ ঘণ্টা পর পানি সরবরাহ করতে হবে;
  • টিউবিফেক্সের বেড তৈরি করে পোনা প্রতিপালন করলে সম আকারের পোনা পাওয়া যায় এবং এতে পোনার বেঁচে থাকার হারও অনেক বেশি;
  • কোনোভাবেই টিউবিফেক্সের বেডে জীবিত হাঁসপোকা সরবরাহ করা যাবে না।

ড. ডুরিন আখতার জাহান*

*প্রকল্প পরিচালক, বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় কুঁচিয়া ও কাঁকড়া চাষ ও গবেষণা প্রকল্প (কম্পোনেন্ট-বি), বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, ময়মনসিংহ


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon